স্টাফ রিপোর্টার : ঝিনাইদহের মহেশপুরে পুকুর খননের নামে ফসলি জমির মাঝখানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধ ভাবে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। আর পাশেই আরেকটি ফসলি জমিতে পাহাড় সমান উচুঁ করে বালুর স্তুপ করা হচ্ছে । এতে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়ে হুমকির মুখে পড়েছে আশপাশের জমিগুলো। স্থানীয়রা একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনকে জানালেও কোন ফল হয়নি।
সরজমিনে যেয়ে দেখা যায়, মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের শ্রীপুর-মোহাম্মদপুর গ্রামের মাঠে কাদেরের ফসলি জমির মাঝখানে বসানো হয়েছে ড্রেজার মেশিন। সেখান থেকে মেশিনের মাধ্যমে খনন যন্ত্রের সাহায্যে বালু তুলছে স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা নয়ন ও জুয়েল নামের দুই ব্যক্তি। আর সে বালু পাহাড় সমান উচু করে রাখা হচ্ছে পাশের আরেকটি চাষের জমিতে।
বালু উত্তোলনের ফলে আশপাশের অন্যান্য জমিগুলোর আইল ভাঙ্গনসহ বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। পাহাড় সমান উঁচু করে ফসলী জমিতে বালু রাখার কারণে অন্যন্য আবাদী জমি গুলো নষ্ট হচ্ছে। এতে কৃষকরা দুঃচিন্তায় পড়েছেন।
ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় নয়ন ও জুয়েল স্থানীয় ক্ষামতার প্রভাব ঘাটিয়ে ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তলন করলেও দেখার কেউ নেই।
স্থানীয় কৃষক আবু বকর অভিযোগ করে বলেন, নয়ন ও জুয়েলের বিরুদ্ধে ভয়ে গ্রামের কেউ কথা বলতে সাহস পায়না। কথা বলতে গেলে হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়ার হুমকি দেয়।
অপর কৃষক লালমিয়া বলেন, মাঠের মাঝখান থেকে কাদেরের জমিতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তুলে আমাদের জমিগুলো ক্ষতির মুখে ফেলছে। আমরা চেয়ারম্যান ও ভুমি অফিসের নায়েবকে জানিয়ে ছিলাম। কিন্তু তাতেও কোন ব্যবস্থা হয়নি। অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে ফসলি জমিতে পুকুর খননের নামে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন গ্রামের কৃষকরা।
ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা নয়ন বলেন, সবার সাথে কমবেশি মিলমিশ করে বালুর ব্যবসাটা করছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মুজিবুর রহমান জানান, বালু উত্তলন বন্ধে একধিকবার অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি। বরং বালু উত্তোলন কারীদের কাছে শত্রু হতে হয়েছে।
ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা কবির হোসেন জানান, এর আগে একবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো। আবারো বালু তোলা শুরু করেছে আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি স্যারের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেবো।
মহেশপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ শাওন জানান, একবার যেয়ে বালু তোলা বন্ধ করে দিয়ে আসা হয়েছে। আবারো যদি বালু তোলা শুরু করে এবার তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply